Skip to content

বাড়তি ওজন কিভাবে কমাবেন

স্বাস্থ্য রক্ষায় আমরা এখন অনেক সচেতন ও বিজ্ঞানমনস্ক। অতিরিক্ত মেদবহুলতা বা স্থূলতা এখন তাই সামাজিক সমস্যার চেয়ে স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। মেদবহুলতা বা অতিরিক্ত ওজন ও স্নেহ পদার্থের আধিক্য সাধারণভাবে মেদবহুলতা বলে মনে করা হয়। এর পরিমাপ হল বডি-মাস-ইনডেক্স () বা সংক্ষেপে বিএমআই।

weight-loss-7300404

বিএমআই-১৮.৫ থেকে ২২.৯-এর ভেতর থাকাটা বাঞ্ছনীয় বা আদর্শ। যাদের বিএমআই ২৭.৫-এর ওপরে তারা স্থূল/মেদবহুল। পক্ষান্তরে, যাদের বিএমআই ২৩-২৭.৪-এর মধ্যে তারা অতিরিক্ত ওজনদার বা ওভারওয়েট। অন্যভাবে বলা যায়, উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজনকে ১০০% ধরা হলে যাদের ওজন আদর্শ ওজনের ১০১%-১১৯%-এর মধ্যে তাদের রয়েছে ‘অতিরিক্ত ওজন’ এবং যাদের ১২০%-এর ওপরে তারা স্থূল।

সাধারণত মানব দেহে দুই ধরনের চর্বিজাতীয় পদার্থ জমা হয়। প্রথমত, অতিরিক্ত চর্বি নিতম্ব ও ঊরুদেশে জমা হয়। একে ‘গাইনয়েড ডিস্ট্রিবিউশন’ বলে। এতে শরীরের আকৃতি অনেকটা নাশপাতির মতো হয়। এটা সাধারণত নারীদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত স্নেহ পদার্থ পেটে জমা হয়। দেহকে আপেলের মতো আকৃতি দান করে। অর্থাৎ উদরদেশ স্ফীত হয়। একে ‘অ্যান্ড্রয়েড ডিস্ট্রিবিউশন’ বলে।
এটা নারী-পুরুষ উভয়ের মাঝেই দেখা যায় এবং এ ধরনের স্নেহ পদার্থের সঞ্চয় রোগের ঝুঁকি বহন করে। রোগের কারণে মেদবহুলতার নানা কারণের মধ্যে প্রথমেই আসে আচরণগত ব্যাপার। সমীক্ষায় দেখা গেছে, মেদবহুল লোকেরা চিরাচরিতভাবেই (ক্যালরি খরচের তুলনায়) কম খাদ্য গ্রহণের কথা বলে থাকেন। এটা হতে পারে ছোটখাটো দু-একটি খাবার যা ঘন ঘন খাওয়া হয় অথচ আমল দেয়া হয় না।
কিছু হরমোন সংক্রান্ত যেমন এন্ডোক্রাইন ইত্যাদিও মেদবহুলতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিছু কিছু ওষুধও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ওজন বাড়ায়। যেমন, ক্লোরপ্রোমাজিন জাতীয় ওষুধ (মাথা ঘোরানো বা বমির জন্য), এমিট্রিপটিলিন (দুশ্চিন্তা দূরকারক), ভ্যালপ্রোয়েট, কার্বামাজেপিন ইত্যাদি। গবেষণায় দেখা গেছে, তিনটি বিষয় ভবিষ্যতে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে।
যথাঃ
১। বিপাকক্রিয়া কম হওয়া।
২। উচ্চ শ্বাসনিক অনুপাত অর্থাৎ অধিক শর্করা জাতীয় খাদ্যের বিপাক।
৩। ইনসুলিন হরমোন যা ডায়াবেটিস হতে বাধা দেয়, তার কার্যক্ষমতা হ্রাস।
মেদবহুলতার সঙ্গে যে সব রোগের ঝুঁকি রয়েছে তা হলো ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্ট্রোক, পিত্তথলির রোগ, বাত ও চর্মরোগ, হারনিয়া, স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স, বন্ধ্যত্ব, শ্বাসতন্ত্রের রোগ।
চিকিৎসকের পরামর্শে ওজন কমানোর ওষুধ খেলে ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে অরলিস্টেট উপাদানে তৈরি এক প্রকার ওষুধ চর্বি পরিপাক ও শোষণে বাধার সৃষ্টি করে চর্বিকে রক্তে শোষিত হতে দেয় না। এর পাশাপাশি এ ওষুধ কোলস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।
এছাড়াও লাইপোসাকশন ও লাইপোলাইসিস নামক সার্জারিও করা যায়। লাইপোসাকশনে নলের মাধ্যমে চর্বি গলিয়ে দেহের বাইরে আনা হয়। লাইপোলাইসিসে আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্যরে পরিবর্তন ঘটিয়ে (লেজার থেরাপি) দেহের বাড়তি চর্বি কমিয়ে আনা যায়। এ প্রক্রিয়ায় কোন কাঁটা-ছেড়ার প্রয়োজন হয় না এবং রক্তক্ষরণও হয় না।

তথ্যঃ ডা. দিদারুল আহসান (ত্বক ও যৌনব্যাধি বিশেষজ্ঞ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: