কলাকে বলা হয় পুষ্টির আধার। এতে আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন। প্রতিদিন একটি কলা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে রাখতে পারে সুস্থ ও নিরোগ। শুধু তাই নয়, চুলের সুস্থতার জন্যও কলা ব্যবহার করা যায়। কলার ব্যবহার চুলকে নরম আর স্বাস্থ্যজ্বল করে। তবে, এই ফল দিয়ে চুলের যত্ন নিতে হলে খুব মিহি করে পেস্ট করতে হবে এবং খুব ভালভাবে চুল পরিষ্কার করতে হবে। নতুবা ত্বকে আটকে থাকতে পারে কলার উপাদানগুলো। নীচে কিভাবে কলা দিয়ে চুল পরিচর্যা করবেন তা দেয়া হলোঃ
কলা ও মধু
আপনার চুল কি খুব আগোছালো ও রুক্ষ? এমনকি চুল ধোঁয়ার পরও তা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে যায়? মাথা আঁচড়ালেও কিছুক্ষন পর কাকের বাসা হয়ে যায়? তাহলে, আপনার জন্য এই মাস্কটি। এটা দিয়ে চুল মসৃণ হওয়ার পাশাপাশি চুল ভেঙ্গে যাওয়াও প্রতিরোধ করবে।
পদ্ধতিঃ দুটি পাকাকলা কাটা চামচ দিয়ে অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেণ্ড করে নিন। সঙ্গে দুই টেবিল চামচ মধু যোগ করুন। এমনভাবে মেশান, যাতে একেবারে মসৃণ পেস্ট হয়ে যায়। মিশ্রণটি এবার ব্রাশ অথবা হাতের সাহায্যে মাথায় লাগিয়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ বা এক টুকরা পলিথিন দিয়ে মাথা মুড়িয়ে রাখুন। আধ ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
জলপাই তেল ও কলা
অসময়ে চুল পড়ে যাচ্ছে। দুর্বল চুলের গোঁড়া মজবুত করে চুলে প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য আনতে এই মাস্ক ব্যবহার করুন। এছাড়াও যাদের চুল খুব কোঁকড়া ও জট পাকিয়ে যায়, তাঁরাও এটা লাগিয়ে দেখতে পারেন।
পদ্ধতি: একটি পাকাকলার সাথে দুই চামচ জলপাই তেল নিয়ে ব্লেণ্ড করুন। কাঁটা চামচ দিয়েও পিষে নিতে পারেন। এবার এই মিশ্রণটি ব্রাশ অথবা হাতের সাহায্যে সম্পূর্ণ চুলে লাগান। কোনও জায়গা যাতে বাদ না থাকে তা বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখুন। ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুলের মসৃণভাব আনতে চাইলে নারকেল বা অন্য কোন অরগানিক তেল ব্যবহার করতে পারেন।
কলা, লেবুর রস ও ডিম
চুলে খুশকির সংক্রমণ কমাতে এই মাস্ক উপকারী। তবে শুধুমাত্র ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করবেন।
পদ্ধতিঃ একটি পাত্রে দুটি কলা কাঁটা চামচ বা অন্য কোন পদ্ধতিতে ভালভাবে পিষে নিন। এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ লেবুর রস ও একটি ডিমের সাদা অংশ মেশান। সম্পূর্ণ চুল ও মাথার ত্বকে লাগান। একটি শাওয়ার ক্যাপ বা পলিথিন দিয়ে মাথা মুড়িয়ে নিন। তারপর ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
কলা, পেঁপে ও মধু
কলা ও পেঁপেতে থাকা এনজাইম চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর পাশাপাশি চুলকে শক্তিশালী করে।
পদ্ধতি: একটি পাকাকলা কাঁটা চামচ দিয়ে পিষে এর সঙ্গে চার-পাঁচ টুকরা পাকাপেঁপের পেস্ট যোগ করুন। তারপর এর সঙ্গে দুই চামচ মধু মেশান।
সম্পূর্ণ চুল ও মাথার ত্বকে মিশ্রণটি লাগান। সব চুল উঁচু করে পেঁচিয়ে নিন এবং একটি টুপির সাহায্যে চুল ঢেকে রাখুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। তারপর শ্যাম্পু করুন।
কলা, দই এবং মধু
খুশকি মুক্ত রাখার পাশাপাশি চুলের আর্দ্রতা রক্ষা করতে এই মাস্ক সাহায্য করে।
পদ্ধতি: একটি পাকাকলা ভর্তা করে, চার টেবিল-চামচ তাজা এবং কোনো রকমের ঘ্রাণ যুক্ত নয় এমন দই এবং দুএক চা-চামচ মধু নিন। এগুলো খুব ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন।
চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালোভাবে এই মাস্ক লাগান। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর চুলে শ্যাম্পু করে নিন।
কলা, ডিম ও মধু
শুষ্ক চুল নরম ও নমনীয় করতে এই মাস্ক কার্যকর।
পদ্ধতি: দুটি পাকাকলা পিষে তার সঙ্গে একটি ডিম মেশান। এবার তাতে দুই টেবিল-চামচ মধু যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ডিমের গন্ধ দূর করতে চাইলে এতে যে কোনো সুগন্ধি তেল যেমন- ল্যাভেন্ডার, কমলা বা লেবুর তেল মেশাতে পারেন।
সম্পূর্ণ চুলে ব্রাশের সাহায্যে মাস্কটি লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করুন।
কলা ও নারিকেলের দুধ
এই মাস্ক ‘ডিপ কন্ডিশনিং’য়ের কাজ করে চুলকে কোমল ও মসৃণ করতে সাহায্য করবে।
পদ্ধতি: দুটি পাকাকলা ও আধ কাপ নারিকেলের দুধ ভালো মতো মিশিয়ে নিন। চাইলে এতে কয়েক ফোঁটা মধু মেশাতে পারেন।
হালকা ভেজা চুলে সামান্য মালিশ করে এই মাস্ক লাগান। দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করে হালকা শ্যাম্পুর সাহায্যে চুল ধুয়ে নিন।