Skip to content

যেকারণে মানুষের মাথার চুল সাদা হয়ে যায়

বুড়ো হয়ে যাওয়া এটা জীবনেরই একটি অংশ। বয়স বেড়ে গেলে খুব স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মাথার চুল আস্তে আস্তে সাদা হয়ে যায়। যদিও জেনেটিকের প্রভাবে সবার চুল ঠিক একই সময়ে সাদা হয়ে যায় না। কিন্তু, বয়স হলে মানুষের চুল কেন ধূসর বা সাদা হয়ে যায় আর এর পিছনের কারণটাই বা কি?

gray-hair-6753587

এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে, সবার আগে দেখতে হবে কেন মানুষের চুল কালো হয়। কোন কারণ চুলের বিভিন্ন রঙয়ের পিছনে কাজ করে।

চুল যেভাবে রঙ্গিন হয়?

চুল সাধারণত মেলানিনের কারণে কালো হয়, যা দুই প্রকারঃ ইউমেলানিন (গাড় বাদামী অথবা কালো) এবং ফিয়োমেলানিন (কমলা এবং হলুদ)। এই দুটো আবার মেলানোসাইটিস থেকে উৎপন্ন হয়, যা প্রতিটি হেয়ার ফলিকল বা চুলের গোঁড়ার এক ধরনের কোষ। চুল যখন বাড়ে তখন, এখান থেকে পিগমেন্ট বা রং গ্রহন করে যার কারণে মানুষের চুলে বিভিন্ন রং দেখা যায়। ঠিক একারনেই, কারও চুলের রং সোনালী হয়, কারোটা বা সাদা হয়, কারো আবার লাল হয়, কারোটা কালো হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে এসব রঙয়ের মাঝামাঝি রং দেখা যায়।

কখন মানুষের চুল ধূসর হয়ে যায়?

বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দেহের কোষগুলো ক্ষয় প্রাপ্ত হতে থাকে। এজন্য রোগ-শোক, পরিবেশ দূষণ অথবা বয়স দায়ী থাকে। যখন এটা ঘটে তখন হেয়ার ফলিকলগুলো এদের রং উৎপাদন ক্ষমতা হারাতে থাকে, যেকারনে মানুষের চুল ধীরে ধীরে ধূসর বা সাদা হয়ে যায়। প্রথম যখন আপনি একটি বা দুটি চুল সাদা হতে দেখবেন, এর মানে এই নয় যে এক রাতের মধ্যে আপনার চুল সব সাদা হয়ে যাবে। যতদিন পর্যন্ত আপনার অন্যান্য চুলের ফলিকলে স্বাভাবিক মেলানোসাইট স্টেম সেল বা কোষগুলো কার্যক্ষম থাকবে, তাঁরা পরবর্তীতে চুলের বৃদ্ধির জন্য মেলানোসাইট উৎপন্ন করতে থাকবে, যা আপনার চুলে পিগমেন্ট বা রং যুক্ত করতে থাকবে। যখন কোনও চুলের ফলিকল স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায়, তখনই সেই চুলটি সাদা হয়ে বাড়তে থাকে।

কেন কিছু মানুষের চুল অন্যদের তুলনায় তাড়াতাড়ি সাদা হয়ে যায়?

উত্তরটি যদিও ১০০% নিশ্চিত নয়। তারপরও অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, সাধারণত মানুষের চুল ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে পাকতে শুরু করে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে এর আগেও চুল পেকে যায়, যা সাধারণত জেনেটিক, লিঙ্গ ও জাতিগত বৈশিষ্টের উপর নির্ভরশীল। মেয়েদের সাধারনত পুরুষদের তুলনায় দেরীতে চুল পাকে। এবং কালোদের ককেশিয়ানদের (এশিয়ান এবং এর মাঝামাঝি জাতি গোষ্ঠীর লোক) তুলনায় পরে চুল পাকে।

২০১৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে যাদের চুল অতি অল্প বয়সে পেকে যায়, তাদের বেশীরভাগ ক্ষেত্রে চুলের ফলিকলগুলো মুক্ত র‍্যাডিক্যালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ধূমপান, রোগ এবং পরিবেশের ক্ষতিকর উপকরণ (যেমন দূষণ) হচ্ছে এর সম্ভাব্য কারণ। এবং যদিও মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় চুল পড়ে যায়, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে প্রমানিত হয়েছে যে এটা চুল পেকে যাওয়ারও কারণ হতে পারে। কিন্তু চুল পাকার পিছনে বংশগত জিনের প্রভাবই সবচেয়ে বেশী। তাই সবশেষে, চুল পাকা না পাকার জন্য আপনি আপনার পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে পারেন। এছাড়াও কিছু কিছু খাদ্যের প্রভাবেও বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াটি তাড়াতাড়ি শুরু হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: