ব্ল্যাকহেডস হচ্ছে ছোট ছোট কালো কালো ফুসকুড়ির মত ব্রণ যা সাধারণত ত্বক নিঃসৃত তেল ও মরা চামড়ার কারণে সৃষ্টি হয়। সাধারণত মুখে দেখা দেয় এবং বিশেষভাবে নাকের চারপাশে, বুকে, ঘাড়ে, বাহুতে এবং কাঁধেও হতে পারে। সাধারণত কিশোরী এবং প্রাক-ঋতুবর্তী মেয়েদের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা বেশী দেখা যায়।

মুখে ব্ল্যাকহেডস দেখা দিলে অনিচ্ছাসত্ত্বেও হাত ওইখানে চলে যায়, যার ফলে দাগ এবং আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ব্ল্যাকহেডস দূর করার ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।
এখানে ব্ল্যাকহেডস দূর করতে পারে এমন বারোটি প্রাকৃতিক উপাদান দেয়া হলোঃ
১। অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার অ্যাসিটিক এসিডের মাধ্যমে ত্বকের কঠিন কাঠামো ভাঙ্গার জন্য পরিচিত এবং আপনার শরীরের পি এইচ ব্যালান্স বজায় রেখে ব্লাকহেডস এবং ব্রণের সমস্যা প্রতিরোধ করে। আপনি টোনার হিসাবে প্রতিদিন আপনার মুখে এটি ব্যবহার করতে পারেন। অথবা তিন চা চামচ পুদিনা পাতার পেস্টের সাথে তিন চা চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এটা আপনার ত্বকের প্রদাহ দূর করে ঠান্ডা অনুভূতি এনে দিবে। এছাড়াও এটা ব্রণের কারণে সৃষ্ট বড় লোমকূপের গর্ত ছোট করতেও সহায়তা করে।
২। ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশ ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটাতে আছে প্রোটীন এবং এল্বুমিন যা ত্বকের ভাঁজ কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বক টান টান করা ও লোমকূপ ছোট করার বৈশিষ্ট্যের কারণে এটা বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তৈলাক্ত ত্বকে নিয়মিত ব্যবহার করলে ব্ল্যাকহেডস কমানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে না হয় তাও নিশ্চিত করে। ডিমের সাদা অংশ ত্বকের গভীর থেকে ময়লা দূর করতে অতুলনীয়, যা ফের আবার ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ
- একটি ডিম, কিছু টিস্যু বা টয়লেট পেপার, একটি ছোট বাটি এবং একটি পরিষ্কার তোয়ালে নিন; ডিমের কুসুম থেকে সাদা অংশ আলাদা করে নিন।
- আপনার মুখ ধুয়ে এবং তারপর ভাল করে শুকিয়ে নিন।
- মুখের উপর ডিমের সাদা অংশের একটি প্রলেপ দিন। তারপর টয়লেট বা ফেসিয়াল পেপারটি মুখে আলতো করে লাগিয়ে নিন। এটাকে কিছুটা শুকান।
- তারপর আবার আরেকটি প্রলেপ দিন। আপনার হাতের আঙ্গুল ডিমের সাদা অংশে ডুবিয়ে সহজেই এটা করতে পারবেন। এবারো শুকান।
- একসময় মাস্কটা যখন শুকিয়ে মুখের উপর শক্ত হয়ে যাবে, তখন এটা টেনে তুলে নিন। কিছু অংশ থেকে গেলে তাঁর জন্য মুখ ভাল করে ধুয়ে নিন।
- মুখের ত্বক মুছে নিয়ে এবার ভালো কোনও ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করুন।
৩। মধু
মধু একইসাথে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল ও এন্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে ত্বকের গভীর থেকে ব্রণ সৃষ্টি হওয়ার প্রবণতা কমায়। মধু একটি প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক যা ত্বকের লোমকূপের গভীর থেকে ময়লা দূর করে ব্রণ কমায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। আপনার ত্বক যদি মধুতে সংবেদনশীল থাকে, তবে অন্যান্য উপায়গুলো অবলম্বন করতে পারেন।
যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ
- এক টেবিল চামচ বিশুদ্ধ মধু একটি কাঁচের বয়ামে গরম করুন (গরম পানির উপর কাঁচের বয়ামটি রেখেই এটা করতে পারেন)।
- অল্প কিছু মধু ব্ল্যাকহেড বা ব্রণের উপর লাগান।
- কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন, যাতে ত্বক এটাকে শুষে নেয়।
- পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
আপনি চাইলে সারারাত রেখে দিতে পারেন। এতে আরও ভালো ফলাফল পাবেন।
৪। হলুদ
হলুদ হলো একটি ঔষধি মশলা, যাতে আছে শক্তিশালী প্রদাহ দূরকারী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানসমূহ। সাধারণ হলুদ ব্যবহারে ত্বকে হলদে দাগ পড়ে যায়। কিন্তু কস্তূরী হলুদ ব্যবহার করলে ত্বকে দাগ পড়ে না কিন্তু ব্রণের জন্য খুব উপকারী।
ব্ল্যাকহেডস দূর করতে হলুদের ব্যবহার
- অল্প পরিমাণ নারকেল তেল ও পানির সাথে মিশিয়ে হলুদের একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- দাগের উপর তা ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
- কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।