বয়সের সাথে সাথে জ্ঞান বাড়লেও ত্বকের কুঁচকানো ভাব এড়ানোর কোনও সহজ উপায় নেই। আপনি যদি আপনার ত্বকের কুঁচকে যাওয়া ভাব নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তবে সঠিক জায়গায়ই এসেছেন। রিঙ্কেল বা ত্বকের কুঁচকানো ভাবের চিকিৎসা যেমন ব্যয়বহুল, তেমনি মানসিকভাবে পীড়াদায়ক। বাজারে এমন অনেক প্রোডাক্ট পাবেন, যারা দাবী করে থাকে, মাত্র কয়েকবার ব্যবহার করলেই আপনার ত্বকের সমস্ত কুঁচকানো ভাব চলে যাবে। এগুলোর কোনও কোনটি তো মোটেও কাজ করে না। অন্যগুলো যদিও কিছুটা কাজ করে কিন্তু অনেক বেশী ব্যয়বহুল। এছাড়াও এগুলোতে এমন সব ক্যামিক্যাল দেয়া হয়, যার অতিরিক্ত ব্যবহার ত্বকের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। এগুলো স্রেফ মজা নয়। আজকে তাই আমি এমন একটি এন্টি-রিঙ্কেল ক্রিম বানানোর পদ্ধতি দেখাবো যা খুব সহজেই ঘরে বসে তৈরি করে নিতে পারবেন।
তাই, দেরী না করে চলুন দেখে নেই।
এই এন্টি-রিঙ্কেল ক্রিমটির মূল উপাদান হচ্ছে সিয়া বাটার। সিয়া বাটার ত্বকের জন্য খুব ভালো। এটা একইসাথে ময়েশ্চারাইজার এবং প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ হিসেবে আপনার ত্বককে আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে বাঁচাবে। একইসাথে এটা এন্টি-এজিং ক্রিম হিসেবেও চমৎকার।
ত্বকের কুঁচকানো ভাব দূর করতে সিয়া বাটার যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে এমন কিছু এন্টি এজিং উপাদান আছে যা ত্বকের কোলাজেন এর ক্ষতি নিরাময় করে ও পুনরায় গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এক গবেষনায় কিছু মানুষকে চার থেকে ছয় মাস তাঁদের ত্বকের উপর সিয়া বাটার ব্যবহার করতে দেয়া হয়। ফলাফল হিসেবে তাঁদের ত্বক আরও পরিষ্কার, উজ্জ্বল হয় এবং কুঁচকে যাওয়া ভাব কমে যায়, এমন কি সূর্যের আলোর ক্ষতিকর প্রভাবও কম দেখা যায়।
তারপরের উপাদানটি হচ্ছে নারকেল তেল। ত্বকের যত্নে বা রূপচর্চায় নারকেল তেল ব্যবহার করেনি এমন মানুষ খুঁজেই পাওয়া যাবে না। রূপচর্চায় ও চুলের যত্নে অসংখ্যভাবে নারকেল তেল ব্যবহার করা হয়। যেমন আজকে আমরা যেই এন্টি-রিংকেল ক্রিমটি তৈরি করবো এতেও নারকেল তেল ব্যবহার করবো। জেনে রাখুন, নারকেল তেল ব্রণ ও ত্বকের ভাঁজ উভয়টি দূর করতেই বেশ কার্যকর। ক্রিমটি তৈরি করতে আমরা মোট ৬ টি উপাদান ব্যবহার করবো। সেগুলো হলোঃ
- ৪ ভাগের ১ কাপ সিয়া বাটার
- ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল
- ১ চা চামচ মিস্টি আমণ্ড তেল
- ৫ ফোঁটা আঙ্গুরবীজের তেল
- ৫ ফোঁটা লবঙ্গের তেল
- ৫ ফোঁটা ল্যাভেণ্ডার এসেনশিয়াল তেল
এছাড়াও লাগবেঃ
- ছোট মেশানোর পাত্র
- হ্যান্ড মিক্সার
- সংরক্ষনের জন্য ছোট জার
কীভাবে বানাবেনঃ
প্রথমে, আপনার হাত ও প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো ধুয়ে নিন। উপরের ছবির মত করে সমস্ত উপাদানগুলো একত্র করে নিন।
১। একটি ছোট পাত্রে সিয়া বাটার, নারকেল তেল এবং আমণ্ড তেল একসাথে রাখুন।
২। এসেনশিয়াল তেল যোগ করুন এবং হ্যান্ড মিক্সার দিয়ে মেশান। মেশানো থাকুন যতক্ষন না মিশ্রণটি ফুলে ক্রিমে রূপান্তরিত না হয়। সম্ভবত ৮ মিনিট সময় লাগবে।
৩। চামচ দিয়ে তৈরি হওয়া ক্রিমটি ছোট জারে ভরে রাখুন।
কীভাবে ব্যবহার করবেনঃ
১। দূষণ এড়াতে, আপনার হাত ধুয়ে নিন।
২। চমচ দিয়ে অল্প পরিমাণ এন্টি-রিঙ্কেল ক্রিম জার থেকে বের করুন।
৩। হাতের তালুতে নিয়ে গরম করুন।
৪। তারপর রিঙ্কেলের উপর সরাসরি প্রয়োগ করুন।
মনে রাখবেন, কাঁচা সিয়া বাটারে কোনও প্রিজারভেটিভ থাকে না তাই এটা সময়ের সাথে সাথে নস্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ৩০-৬০ দিনের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন এই পরিমাণ ক্রিম তৈরি করুন। ক্রিমটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে।
কারা এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারবেনঃ যাদের অত্যন্ত শুষ্ক ও ত্বক কুঁচকে গেছে, এবং ত্বকের কোনও কোনও স্থানে ভাঁজ পড়ে গেছে। নরমাল ত্বক এবং তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা ব্যবহার করবেন না।
শেয়ার করুনঃ
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to share on Reddit (Opens in new window)
- Click to share on Tumblr (Opens in new window)
- Click to share on Pinterest (Opens in new window)
- Click to share on Pocket (Opens in new window)
- Click to share on Telegram (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to share on Skype (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)