“যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ হোক সে যেন আত্মীয়তা-সম্পর্ক বজায় রাখে।” [বুখারী : ৫৯৮৫; মুসলিম : ৪৬৩৯]
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এই হাদীসটিতে এমন কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যা দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় ক্ষেত্রে উপকারী।
যদিও দেখা যায় কারো কারো রিজিক নির্দিষ্ট পরিমাণে দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এর দ্বারা বোঝা যায় রিজিক বাড়ার অর্থ হচ্ছে তার রিজিকে বরকত হওয়া এবং এর দ্বারা উপকার হওয়া।
এটা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। ধন সম্পদ এর উপকারিতা সবাই অর্জন করতে পারে না। একমাত্র যাদের জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত সহায়ক হয়, তারাই কেবল তা উপযুক্ত জায়গায় ব্যবহার করতে পারে।
রিজিক বাড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাথে আল্লাহ তাআলা এই কাজের জন্য বিশেষ সওয়াব দান করেন, এবং আখেরাতেও এর উত্তম প্রতিদান দান করেন।
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখলে মন প্রফুল্ল থাকে এবং সবকিছুতে বরকত হয়। মানসিক প্রশান্তি ও স্বস্তি পাওয়া যায়। মানুষ সামাজিক জীব। আর এ কারণেই দেখা যায়, মানুষ লোকালয়ে বসবাস করতে পছন্দ করে। যত সুন্দর ও মনোরম জায়গাই হোক না কেন, মানুষ সেখানে থাকতে চায় না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “… আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত।” কুরআনের অনেক জায়গায় আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে সরাসরি নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এই কাজের প্রশংসা করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা কতটা জরুরী।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন: ‘ওই ব্যক্তি আত্মীয়তার-সম্পর্ক রক্ষাকারী নয় যে সম্পর্ক রক্ষার বিনিময়ে সম্পর্ক রক্ষা করে। বরং প্রকৃত আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষাকারী সেই, যার সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরলে সে তা জোড়া দেয়।’ [বুখারী : ৫৯৯১]
একজন প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি আত্মীয়দেরকে অনুগ্রহ করার পর তাদের কাছ থেকে কোনও ধরনের প্রশংসা বা প্রতিদান আশা করে না। বরং মুমিনের মন এমন হওয়া উচিত, যে যদি কোনও আত্মীয় তার সাথে ভালো আচরণ করে, তাহলে তো সে ভালো আচরণ করবেই। কিন্তু যদি কেউ ভালো আচরণ নাও করে তবুও সে তার সাথে খারাপ আচরণ করে না।
অনেক সময় দেখা যায়, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একজন মুসলিম সর্বদাই নিজের সাথে এবং তার আশেপাশের লোকদের সাথে বিভিন্ন কারণ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে মতপার্থক্যের শিকার হয়। যেমন বিভিন্ন ফরয হুকুম পালন করতে গেলে সব আত্মীয়কে সন্তুষ্ট করে চলা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে আত্মীয়রা তার সাথে খারাপ ব্যবহার করলে তার উচিত হবে আত্মীয়দেরকে বুঝিয়ে বলা। এরপরও যদি তারা না মানে তাহলে, তাদের খারাপ আচরণের কারণে সবর করা। এবং তাদের সাথেও অনুরূপ আচরণ না করা।
যে ব্যক্তি সঠিক পথে চলার জন্য তার রবের সাহায্য প্রার্থনা করবে সে সৎপথে পরিচালিত হবে এবং সঠিক পথে অটল থাকবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সাহায্য করুন।