আজ আমরা এমন একটা সেমাইয়ের রেসিপি দেখবো, যা খেতে উপরের দিকটা বেশ মুচমুচে এবং ভিতরের দিকটা ক্রিমের মত। এই সেমাইটা একবার বানিয়ে খেলে স্বাদ সব সময় আপনার মুখে লেগে থাকবে। তো চলুন দেখে নেই, কি কি উপাদান লাগবে এই সেমাইটা বানাতেঃ
১। ৩০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই।
২। ৩ টেবিল চামচ ঘি বা মাখন (যার যেটা পছন্দ)।
৩। কয়েকটা বাদাম আর কিশমিশ।
৪। আধা কাপ চিনি।
৫। আধা কাপ পাউডার দুধ।
ক্রিমের জন্যঃ
১। দুই কাপ ননীযুক্ত দুধ।
২। আধা কাপ কাস্টার্ড পাউডার।
৩। আধা কাপ ক্রিম।
৪। আধা কাপ কন্ডেন্সড মিল্ক।
৫। কেওড়ার পানির সাথে ভিজিয়ে নেয়া দুই থেকে তিন দানা জাফরান।
প্রস্তুত প্রনালীঃ প্রথমে চুলায় একটি ফ্রাইপ্যানে তিন টেবিল চামচ ঘি দিন। ঘি গরম হয়ে গলে গেলে এর মধ্যে দুই টেবিল চামচ কিশমিশ ও এক টেবিল চামচ কাঠ বাদাম ও এক টেবিল চামচ পেস্তা বাদাম দিয়ে হালকা বাদামী রং করে ভেজে তুলে নিন।
এবার বাকি থাকা ঘিতে ৩০০ গ্রামের মত লাচ্ছা সেমাই দিয়ে দিন। চুলাটা এর মধ্যে বন্ধ করে দিন যাতে ঘি অতিরিক্ত গরম না হয়। এবার এর মধ্যে আধা কাপ চিনি দিয়ে দিন। এটা চাইলে আপনার পছন্দ অনুযায়ী কম বেশি করে নিতে পারেন। এবার দিয়ে দিন আধা কাপ গুঁড়া দুধ। গুঁড়া দুধ আর চিনি দেয়ার পর চুলাটা জ্বালিয়ে দিন। চুলা একদম কম আঁচে রেখে এতে সেমাইটাকে ভেজে নিন। কিছুক্ষণ পর যখন দেখবেন চিনিটা গলে গেছে ও সেমাইয়ের রং পরিবর্তন হয়ে হালকা বাদামী রং হয়ে গেছে, তখন এতে সামান্য পরিমাণ জাফরান রং দিয়ে দিন। এই বিষয়টি ঐচ্ছিক। চাইলে এটা বাদ দিতে পারেন। ভালো করে সেমাই ভাজা হয়ে গেলে এবার একটি বাটিতে তুলে নিন।
এবার ক্রিম তৈরির পালাঃ
একটি কাঁচের সার্ভিং ডিশে অর্ধেক সেমাই নিয়ে চেপে চেপে সুন্দর করে বিছিয়ে দিন। বিছানো হয়ে গেলে এবার ক্রিম তৈরির পালা।
ক্রিম তৈরি করবেন যেভাবেঃ একটি প্যানে চারকাপ দুধ নিয়ে তা জ্বাল দিয়ে দুই কাপ করুন। তারপর ঠান্ডা করে নিন। এবার এই ঠান্ডা দুধে আধা কাপ গুঁড়া দুধ দিয়ে দিন। এবং আরও আধা কাপ কাস্টার্ড পাউডার দিন। এবার এই কাস্টার্ড পাউডার আর গুঁড়া দুধ ভালো করে লিকুইড দুধের সাথে মিশিয়ে দিন।
মিশানোর পর এবার আরও আধা কাপ কন্ডেন্সড মিল্ক দিন। চাইলে চিনিও দিতে পারেন। তবে এটা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছা। কন্ডেন্সড মিল্কে যেহেতু চিনি থাকেই, তাই আলাদা করে আর চিনি না দিলেও হবে। তবে, চিনি দিলে পানি বের হয়, এজন্য আরো জ্বাল দিতে হবে। এজন্য চিনির পরিবর্তে কন্ডেন্সড মিল্কই ভালো। এবার এর সঙ্গে দিয়ে দিন আধা কাপ ক্রিম।
বাজারে অনেক ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়। আপনার পছন্দমত ক্রিম দেয়ার পর ভালোভাবে নেড়েচেড়ে দিন ও জ্বাল দিতে থাকুন। চুলার আঁচ একদম কম রেখে অনবরত নাড়তে থাকুন। জ্বাল করতে করতে যখন ক্রিমটা অনেকটাই ঘন হয়ে আসবে এবার এতে জাফরান দিয়ে মেশানো কেওড়া জল দিয়ে দিন। এক টেবিল চামচ কেওড়ার জলে দুই তিনটা জাফরান ভিজিয়ে রাখলেই হবে। জাফরান দিলে আপনার ক্রিমে সুন্দর একটা রং চলে আসবে। চাইলে এই স্টেপটা বাদও দিতে পারেন।
ক্রিমটা ঠাণ্ডা হলে আরও ঘন হয়ে যাবে। তাই, হালকা ঘন হয়ে গেলেই ক্রিমটা নামিয়ে বিছিয়ে রাখা সেমাইয়ের উপর সরাসরি ঢেলে দিন। এবার, বাকি অর্ধেক ভাঁজা সেমাই ক্রিমের উপর দিয়ে দিন। এবার এর উপর আগে থেকে ভেজে রাখা কিশমিশ ও বাদামের টুকরাগুলো দিয়ে সাজিয়ে রাখুন। নওয়াবি সেমাই ঠান্ডা ঠান্ডা খেতে বেশি মজা। তাই এবার এই সেমাইটাকে ফ্রিজের নরমাল চেম্বারে রেখে ঠান্ডা করে নিতে হবে। সেমাইটা সাজানোর পর বেশ গরম থাকে। তাই এটা যখন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় মোটামুটি ঠান্ডা হবে তখনই ফ্রিজের নরমাল চেম্বারে রাখবেন। ফ্রিজে রাখার পর একদম ঠান্ডা হয়ে গেলে তারপর পরিবেশন করবেন। ত হয়ে গেলো মজাদার নবাবি সেমাই এবার আপনার পছন্দমত টুকরা টুকরা করে সবাইকে পরিবেশন করুন।
আজ এ পর্যন্তই। আবার অন্য কোনও দিন লিখবো অন্য কোনও মজার রেসিপি নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন।