Skip to content

কিভাবে হাতের কাজ বা এম্ব্রয়ডারী করতে হয়

সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে হাতের কাজ করা বেশ সহজ

হাতের কাজ বা হ্যান্ড এম্ব্রয়ডারী গ্রাম বাংলায় বহুকাল আগে থেকেই প্রচলিত একটি শিল্প। একসময় বাংলাদেশ তথা পূর্ববঙ্গের মানুষ অত্যন্ত কৃষি নির্ভর একটি জনগোষ্ঠী ছিলো। তাদের মধ্যে শিক্ষা দীক্ষার এত প্রচলন না থাকলেও তাঁরা নিজেদের প্রয়োজন নিজেরাই পূর্ণ করতে সক্ষম ছিলো।

হাতের কাজের প্রাথমিক কাঁচামাল

যেমন শস্য ও ধান চাষাবাদের পাশাপাশি তারা তুলা ও রেশম চাষ করতো। এগুলো থেকে চরকায় সুতা কেটে তৈরি হতো পোষাক তৈরির কাঁচামাল। তারপর হাতে তৈরি তাঁত দিয়ে কাপড় তৈরি করা হতো।

গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্য দখল করে নিয়েছে কলের মেশিন। কিন্তু প্রক্রিয়াটি একইরকম আছে। এখন সুতা কাটা থেকে কাপড় প্রস্তুত ও কাপড়ে এম্ব্রয়ডারী করা সব কিছুই মেশিনের সাহায্যে করা যায়।

কিন্তু মেশিনের সাহায্যে সব কিছু করা গেলেও হাতে তৈরি তাঁতের কাপড় ও হ্যান্ড এমব্রয়ডারির আলাদা কদর আছে। হাতের কাজের সুনিপুণ নকশা করা জামা পরতে খুব আরামদায়ক। যা মেশিন এমব্রয়ডারিতে পাওয়া যায় না। হাতের কাজ দেখতে খুব সুন্দর ও মজবুত হয়।

হাতের কাজের প্রচলিত রূপ

এখনো ঘরে ঘরে পুরনো শাড়ি দিয়ে কাঁথা তৈরির প্রচলন আছে। অনেকে আবার পাতলা এক ধরনের তাঁতের নতুন কাপড় ব্যবহার করে কাঁথা তৈরি করে থাকেন।

কাথার বাহারি রং ও নকশা সহজেই নজর কেড়ে নেয়। এ যেন গ্রাম বাংলার চিরায়ত শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে সেলাইয়ের আনুষঙ্গিক ফোড় নানা ধরনের সেলাই পদ্ধতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।

হাতের কাজ করতে যা যা লাগে

হ্যান্ড এমব্রয়ডারি বা হাতের কাজ করার জন্য আপনার দরকার হবে একটি এমব্রয়ডারি হুপ বা ফ্রেম। কয়েক গাছি সুতা ও পছন্দের রঙের কাপড়। মনে রাখতে হবে হ্যান্ড এমব্রয়ডারি কাপড়ের উপর ফুটিয়ে তোলার জন্য সবসময় বিপরীত রঙের সুতা ও কাপড় নির্বাচন করতে হয়। আর লাগবে সুঁই।

এখন বাজারে মোটা ও চিকন অনেক ধরনের সুঁই পাওয়া যায়। কাপড়ের ধরন অনুযায়ী সুই নির্বাচন করতে হবে। যদি কাপড়টি মোটা ও ভারী হয় তাহলে সুইটি বেশ মোটা ও আগা সুচালো চিকন হতে হবে। আর যদি কাপড় নরম পাতলা হয় তাহলে কিছুটা চিকন বা মোটা কিন্তু ভোঁতা ধরনের সুঁই দিয়ে সেলাই করা সম্ভব।

এমব্রয়ডারি সুতার উপর নির্ভর করেও সুঁই নির্বাচন করতে হয়। সুতার পরিমান যদি বেশি হয় তাহলে সুঁইয়ের চোখ বেশ বড় ও ফাঁকা হওয়া দরকার। অন্যদিকে সুতা চিকন হলে সুঁইয়ের চোখ ছোট থাকলেও সহজে সুঁইয়ে সুতা পড়ানো সম্ভব।

হাতের কাজের বিভিন্ন ফোঁড়

যাই হোক এমব্রয়ডারি করতে বেশ কিছু সেলাই বা ফোঁড় জানা দরকার। যেমন চেইন ফোঁড়, সোজা ফোঁড়, ডাল ফোঁড়, ভরাট ফোঁড়, ফ্রেঞ্চ নট, হেরিংবোন ইত্যাদি। এই বেসিক সেলাই গুলো জানা থাকলেই এমব্রয়ডারি করা সহজ।

প্রথমে পছন্দসই ডিজাইন কোন একটি অস্থায়ী মার্কার পেন দিয়ে কাপড়ের উপরে এঁকে নিতে হবে। তারপর ফ্রেম বা হুপে কাপড়ের অংকনকৃত ডিজাইনটি টানটান করে আটকে নিতে হবে। এরপর সেলাই শুরু করতে হবে। সেলাই শুরুতে ও শেষে অবশ্যই গিঁট দিয়ে সুতার শেষ প্রান্ত কাপড়ের সাথে আটকে দিতে হবে ও কাঁচি দিয়ে বাড়তি সুতা কেটে ফেলতে হবে।

ব্যস এভাবেই আপনি আপনার জামা অথবা কাঁথায় যেকোনো নকশা এম্ব্রয়ডারী করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: