Skip to content

অনেক অনেক দিন আগে একদিন নিরাপদ আবাস ছিলো

ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

অনেক অনেক দিন আগে একদিন নিরাপদ আবাস ছিলো। তারপরও মানুষ নিরাপত্তার অভাব বোধ করতো। আমার মনে হয়, নিরাপত্তার অভাব একটি আপেক্ষিক বিষয়। কারো কারো বহু কিছু থাকার পরও সে নিরাপত্তার অভাবে ভোগে। আর কারো কারো কাছে কিছু না থাকলেও সে নিজেকে ১০০% নিরাপদ ভাবে।

এখনকার পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। মানুষ এখন ঘরে বন্দি। রোগের নাম “করোনা” মানে হচ্ছে “করো না”। সত্যিই করোনা সব কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। বাচ্চারা যা পড়েছে সব ভুলে গেছে। সবার কাজের রুটিন উলট-পালট হয়ে গেছে। তবে, সবাই যে থেমে গেছে, তা কিন্তু বলা যাবে।

শহুরে পরিবেশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য অফিসগুলো কেবল বন্ধ। তবে, মানুষ কিন্তু একজন আরেকজনের সাথে মিশছে। কথা বলছে। দেখা করছে। সবই হচ্ছে। শুধু যার যার কাজ করা থেমে আছে।

গ্রামের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে কেউ থেমে নেই। থামার কথাও চিন্তা করছে না কেউ। করোনা নামের কোনও রোগের অস্তিত্ব সম্ভবত শহরেই। গ্রামের মানুষ বেশীর ভাগই নিরাপদ।

যাই হোক, যাদের জীবিকার প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে হয় না, তাঁদের জন্য ঘর আর বাহির দুটোই সমান। এখন আসি অনেক অনেক বছর আগের কথায়। তখন এই ব-দ্বীপ রাষ্ট্রের কথাও এত আয়োজন ছিলো না। বেশী নয়। এই ত বিশ বছর আগেও ঢাকায় এত উপচে পড়া ভিড় ছিলো না।

বিশেষ বিশেষ সময়ে রাস্তায় মানুষের আনাগোনা অনেক কম থাকতো। হঠাৎ করে কী এমন হলো যে, মানুষ দম বন্ধ হয়ে গেলেও ঢাকা শহরে থাকতে আগ্রহী হয়ে গেলো। ঢাকায় নাকি টাকা ওড়ে। আর এই উড়ন্ত টাকা ধরতেই মানুষ পংগপালের মতো ঢাকায় ছুটে আসে।

মফস্বল এলাকায় যে পণ্যের দাম ১০-১৫ টাকা। ঢাকায় আসতে আসতে তা হয়ে যায় কয়েক গুণ। বাহ। কী চমৎকার। সম্ভবতঃ এই সব প্লেনে করে পাঠানো হয়। নয়তো এত দাম কী করে বাড়ে। মানুষের টাকা হলে নাকি খরচ বাড়ে। তা খাদ্যের দাম যদি এমন আকাশচুম্বি হয়, তাহলে বেশীর ভাগ মানুষের আবার দরিদ্র হতে সময় লাগবে না।

চলুন, এবার অনেক বছর আগের চিত্রে ফিরে যাই। তখন এত টাকার ছড়াছড়ি ছিলো না। মানুষ কিনে খুব কম খেতো। বেশীর ভাগই পুকুরের মাছ, বাগানের সবজি আর গোলার ধান চাল দিয়েই খাবারের প্রয়োজন মেটাতো। হ্যাঁ, তখন ত তবুও মানুষের অভাব ছিলো। ভাতের অভাব না। আনুষঙ্গিক প্রয়োজন পূরণের অভাব।

এখন প্রশ্ন হলো অন্যান্য প্রয়োজন পূর্ণ হলেও কি আবার নতুন করে মানুষের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। হয়তোবা হ্যাঁ অথবা হয়তোবা না। মানুষ পারে না এমন কিছুই নেই। আনুষঙ্গিক প্রয়োজন পূর্ণ করতে যখন কারো উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হতে হয়। তখন তাঁকেও হয়তোবা কোনও না কোনোভাবে নির্ভরশীল করতে হয়। এভাবেই চলছে সমাজ। আর এভাবেই নির্মিত হয়েছে নতুন নতুন সভ্যতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: