Skip to content

ঘরে তৈরি মরিচের মজাদার মিষ্টি সস বা চাইনিজ চিলি সস

মজাদার চিলি সস

ঝাল মরিচের সস ইংরেজীতে চিলি সস নামে পরিচিত। সাধারণত চিলি সস তৈরি করতে বড় আকারের বা ছোট আকারের লাল মরিচ ব্যবহার করা হয়। কেউ কেউ চিলি সস রান্না করে তৈরি করে আবার কেউ কেউ চিলি সস চিনি দিয়ে মজিয়ে তৈরি করে থাকেন। এক্ষেত্রে চিলি সস তৈরি করতে ভূমিকা রাখে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া, যার নাম হচ্ছে ল্যাক্টোব্যাসিলাস। এভাবে তৈরি চিলি সস দারুণ স্বাদের হয়, খাবারকে টেস্টি ও স্পাইসি করতে ভূমিকা রাখে। এই পদ্ধতিতে পরিমাণ মতো লাল লঙ্কা বা মরিচ চিনির সাথে ব্লেণ্ড করে বাতাস চলাচল করতে পারে এমন জায়গায় উপরে সুতির কাপড় বেঁধে রেখে দেয়া হয়। ১৫ দিন থেকে এক মাসের মধ্যে চিলি সস তৈরি হয়ে বয়ামের নিচে জমা হয়। এভাবে ধীরে ধীরে সম্পুূর্ণ মরিচ গলে গিয়ে সস তৈরি হয়ে যায়। এই সস সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় চীনে। তাঁরা প্রায় প্রতিটি রান্না ও সালাদে এই সস ব্যবহার করে থাকে। তাই এর আরেক নাম চাইনিজ হট চিলি সস।

এভাবে টেস্টি স্পাইসি চিলি সস তৈরি করতে আপনার নিচের উপকরণগুলো লাগবেঃ

  • একটি কাঁচ বা সিরামিকের বড় জার।
  • দুই কাপ হালকা ভাবে ব্লেন্ড করা লাল বা শুকনা মরিচ (বোটা ছাড়ানো)
  • আধা কাপ চিনি।
  • জারের মুখ বাধার জন্য পরিষ্কার কাপড় ও দড়ি

তৈরির পদ্ধতিঃ

প্রথমেই লাল মরিচ ভিজিয়ে নিন। ৬-৭ ঘণ্টা পর মরিচ ভিজে নরম হলে হালকাভাবে ব্লেন্ড করে নিন। এর সঙ্গে আধা কাপ চিনি ও অল্প পরিমাণে পানি মিশিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। এবার বেশ আঠালো একটি মিশ্রণ তৈরি হবে। প্রয়োজনে আরও একটু চিনি মেশাতে পারেন। এই মিশ্রণটি এবার কাচের বা সিরামিকের জারে ভরে অর্ধেক পরিমানে পূর্ণ করুন ও বাকি অর্ধেক খালি রাখুন। এর ফলে ব্যাকটেরিয়া যখন মরিচ গলাবে তখন কার্বন ডাই অক্সাইডের কারণে এই মরিচ জারের মুখ উপচে পড়বে না। এবার জারের মুখটি এক টুকরা কাপড় ও দড়ি দিয়ে বেঁধে দিন। তাহলে ব্যাকটেরিয়া ধীরে ধীরে যখন মরিচের আধ ভাঙ্গা টুকরা গুলো গলিয়ে ফেলবে তখন, এখান থেকে সৃষ্ট গ্যাস সহজেই বেরিয়ে যেতে পারবে। শুকনা মরিচ এম্নিতেই পচনরোধী, আর চিনি ও মরিচে থাকা ল্যাক্টোব্যাসিলাস খুব সহজেই মরিচকে ভেঙ্গে তরল সসে পরিণত করতে পারে। তবে কাঁচের জার যদি কাপড়ের পরিবর্তে বাতাস প্রতিরোধী অন্য কোনও কিছু দিয়ে আটকানো হয়, তাহলে ভিতরে সৃষ্ট গ্যাসের কারণে জার ফেটে বা ভেঙ্গে যেতে পারে।

ব্যস, হয়ে গেলো চাইনিজ পদ্ধতিতে তৈরি মজাদার চিলিসস। ১৫ দিন বা ১ মাস পর এই চিলি সস ভালোভাবে মিশিয়ে যেকোনো খাবারে দিলে খাবারের স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াবে ও খাবারটি বেশ ঝাঁজালো ও স্পাইসি মনে হবে।

কিভাবে ব্যবহার করবেন স্পাইসি চিলি সস

আগেই বলেছি, এই স্পাইসি চিলি সস যেকোনো খাবার বা রেসিপি বা তরকারীর সাথে ব্যবহার করলে এর স্বাদ বহুগুণে বেড়ে যাবে। তবে রেসিপি দিচ্ছি যাতে এই চিলি সস ট্রাই করে দেখতে পারেনঃ

১। তেতুলের আচারঃ ২০০ গ্রাম তেঁতুলের সঙ্গে পরিমানমতো চিলি সস, পানি ও চিনি দিয়ে জ্বাল দিন। যখন তেতুল বেশ থকথকে ও ঘন হয়ে যাবে তখন এতে যোগ করুন বিট লবণ ও পাঁচফোঁড়নের গুঁড়া। এবার এই স্পাইসি তেতুলের আঁচার কাচের জারে সংরক্ষন করুন। সংরক্ষণ করার আগে স্বাদ চেখে দেখুন। অসাধারণ মজাদার ও স্পাইসি হয়েছে।

২। চিলি সস দিয়ে তৈরি গরু বা খাসির গোশত ভুনাঃ এই চিলি সস দিয়ে গরু বা খাসির গোশত ভুনা করলে গোশতের ভিতরের স্পাইসি স্বাদ প্রবেশ করবে। এজন্য আপনার লাগবে আধা কেজি রানের গোশত(ভালো করে ধুয়ে কাপড় দিয়ে মুছে নেয়া)। গোশত থেকে ভালো করে পানি সরিয়ে এতে মেশান ১ থেকে ২ চামচ চিলি সস, পরিমাণ মতো কেচাপ ও টকদই। এবার এক থেকে দুই ঘন্টা নরমাল ফ্রিজে মেরিনেট করে এই গোশত এবার রান্না করতে পারেন। তৈরি হয়ে যাবে মজাদার জুসি ও স্পাইসি বিফ বা মাটন ভুনা।

এছাড়াও এই চিলি সস সালাদ সহ অন্যান্য উপকরণ দিয়েও খাওয়া যায়। আপনার ইচ্ছেমতো রেসিপিতে ট্রাই করে দেখতে পারেন। আজ এই পর্যন্তই। বাসায় তৈরি করে নিচের কমেন্টে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। ভালো লাগলে কাছের মানুষদের সাথেও রেসিপিটি শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: