অন্যভাষায় কথা বলা এবং লেখা সে ভাষার মানুষের সাথে আমাদেরকে যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্য করে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে অন্য ভাষায় বিশেষ করে ইংরেজীতে পারদর্শিতা আপনাকে বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে আপনাকে অনেক বেশী সহায়তা করতে পারে। তবে যে কোনও ভাষায় কথা বলা ও লেখার জন্য সে ভাষার শব্দ ভান্ডারের উপর যথেষ্ট দখল ও আয়ত্ত থাকা প্রয়োজন।
১। বিভিন্ন বৈষয়িক ভাগে ভাগে শিখতে চেষ্টা করুনঃ
অনেক সময় শব্দ ভান্ডার (Vocabulary) বাড়াতে আমরা অন্য ভাষার একটি একটি করে শব্দ শিখি। তবে এসব শব্দ মনে রাখা কঠিন হয় এবং কোনও কাজে আসে না। একটি একটি করে শব্দ শেখার বদলে বিভিন্ন ক্যাটাগরি বা ভাগে ভাগে শিখতে পারেন। যেমন ইংরেজীর কথাই ধরুনঃ
রান্নাঘরের যেসব জিনিষ থাকে সেগুলোর সবগুলোর ইংরেজী কি আপনি জানেন? এবং আপনার বাথরুমে যেসব জিনিষ আছে, তার সবগুলোর ইংরেজী প্রতিশব্দ কি আপনার জানা? না জানলে এবার এভাবে ভাগ করুনঃ
রান্নাঘরের বিভিন্ন জিনিসঃ
- চুলা
- ওভেন
- শীল নোড়া
- চাকু
- গ্লাস
- প্লেট
- বাটি
- মগ
- হাড়ি
- চামচ
ইত্যাদি। এই শব্দগুলোর ইংরেজী প্রতিশব্দ বের করে খাতায় লিখে ফেলুন।
একইভাবে আপনার ওয়াশরুমে যেসব জিনিষ থাকে, তা উপরের মতো করে খাতায় লিখে নিন। এবং প্রতিশব্দ খুঁজে বের করুন।
২। জার্নাল ও স্টিকি নোটঃ
সাথে একটি নোটবুক রাখুন। গুরুত্বপূর্ণ কোনও শব্দ পেলে তা সাথে সাথে লিখে ফেলুন। পরবর্তীতে এই শব্দগুলো দিয়ে নতুন নতুন বাক্য রচনা করুন। এছাড়াও নোটবুকের পাতায় নতুন নতুন শব্দ লিখে তা বাড়ির দেয়াল বা এমন জায়গায় লাগিয়ে রাখুন, যা সহজেই চোখে পড়বে।
৩। শব্দ বিন্যাস বা শব্দের ব্যবহার শিখুনঃ এ সম্পর্কে শিখতে কোন শব্দের পর কোন শব্দ বসবে সে সম্পর্কিত ডিকশনারী দেখুন। ইংরেজীতে একে কোলোকেশন (Collocations) বলা হয়। কোলোকেশন হচ্ছে গুচ্ছ শব্দ যা প্রায়শই একটির পর আরেকটি বসে থাকে। (যেমন, সিংহ গর্জন করে, ডাকে অথবা কাঁদে না)। এই যে সিংহ এবং গর্জন এগুলো হচ্ছে পরস্পর কোলোকেশন। এজন্য বিভিন্ন কোলোকেশন ডিকশনারি দেখতে পারেন। শব্দভান্ডার বাড়াতে হলে শব্দগুচ্ছ নিয়ে চিন্তা করা উচিৎ, শুধুমাত্র শব্দ নিয়ে নয়।
৪। নিমোনিকস(Mnemonics): কোনও কিছু মনে রাখতে নতুন শব্দ বা শব্দগুচ্ছকে বিশেষ ভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে একত্রে উচ্চারন করাকে নিমোনিকস বলা হয়। এভাবে নতুন শব্দ মনে রাখতে নিজস্ব নিমোনিকস তৈরি করতে পারেন। যেমন ইতালিয়ান ভাষায় বিশেষ ধরনের প্রজাপতিকে ফারফাল্লা(Far-fall-a) বলা হয়, যার অর্থ হচ্ছে যে প্রজাপতি যত উপরে উঠে তা ততো দূরে গিয়ে পড়ে। এ ধরনের নিমোনিকস (Mnemonics) খুঁজে পেতে নিমোনিকস ডিকশনারীর সাহায্য নিতে পারেন।
৫। নতুন শব্দ পেলে তা বার বার বলুন ও লিখে রাখুনঃ
নতুন কোনও শব্দ পেলে তা সাথে সাথে ব্যবহার করুন। যেমন, খাতায় লিখে ফেলুন। কোনও বাক্যে শব্দটি ব্যবহার করুন। দিনে কমপক্ষে তিন বার এই শব্দটি ব্যবহার করুন।
৬। বিষয় ভিত্তিক শব্দ আয়ত্ত করুনঃ পেশাগত জীবনে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক শব্দ সম্পর্কে পরিচিত হউন। এমন নয় যে কোনও ভাষার সব শব্দই আপনার আয়ত্তে থাকবে। তবে আপনার পেশাগত প্রয়োজন পূরণের জন্য এর সঙ্গে সম্পর্কিত শব্দগুলো আয়ত্ত করুন। যেমন যে বিষয়ে পড়ালেখা করছেন বা কাজ করছেন সে সম্পর্কিত শব্দসমূহ।
- আর্কিটেক্ট সম্পর্কিত শব্দ সমুহ
- মেকানিক সম্পর্কিত শব্দ সমুহ
- রান্নাবান্না সম্পর্কিত শব্দ সমুহ
এ সম্পর্কে গুচ্ছ গুচ্ছ শব্দের ছক, চার্ট, বৃত্ত ইত্যাদি তৈরি করুন।
৭। দেখে দেখে শব্দ লিখে রাখুনঃ নিজের সাথে একটি ছোট নোটবুক, ল্যাপটপ বা ট্যাবে একটি আলাদা ফাইল রাখুন। বারান্দা বা এমন একটি জায়গায় বসে পড়ুন, যেখান থেকে কোনও দৃশ্য বা অনেক জিনিষ দেখা যায়। এবার যা যা দেখলেন, সব নতুন ভাষায় লিখে ফেলুন। যদি আপনি নতুন কোনও কিছুর প্রতিশব্দ না জানেন, তবে তা নিজের ভাষায় লিখে ফেলুন। পরে এই শব্দের প্রতিশব্দ খুঁজে বের করুন। প্রতিদিন নতুন নতুন জায়গায় যেতে পারেন। যেমনঃ পার্ক, এয়ারপোর্ট, অফিস বিল্ডিং ইত্যাদি।
৮। একটি শব্দ সময় নিয়ে আবার দেখুনঃ কোনও শব্দের অতিরিক্ত পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এমন ভাবে নতুন ভাষা শিখুন, যাতে এক শব্দ আবার ব্যবহার হতে বেশ খানিকটা সময় নেয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সফটওয়্যার সাহায্য করতে পারে। যেমনঃ https://apps.ankiweb.net/ এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে কোনটি কোনটি আপনার জন্য হয়তোবা খুব ভালো কাজ করবে আর কোনো কোনোটি কম ফলপ্রসূ হবে। তবে এই পদ্ধতিগুলো আপনি ভাগে ভাগে চেস্টা করতে পারেন এবং ফলাফল লিখে রাখতে পারেন। শব্দ ভান্ডার বাড়াতে অন্য কোনও পদ্ধতি জানা থাকলে আমাদের সাথে শেয়ারও করতে পারেন।