Skip to content

প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দর হয়ে উঠতে চান? নিচের কাজগুলো করুন

প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দর

প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর বা ন্যাচারাল বিউটি বলে একটা কথা আছে। যারা দেখতে এমনিতেই সুন্দর। এটা সত্য যে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে প্রতিযোগিতা করে অন্য কোনও কিছুই টিকতে পারে না। বাজারে প্রচুর মেকআপ ব্র্যান্ড আছে। আর আমাদের অনেকেরই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সব সময়ই লেগে আছে। তাই অনেকেই এই মেকআপ পণ্যগুলো প্রয়োগ করে ত্বক সুন্দর দেখানোর চেষ্টা করে।

ত্বকে মেকআপ ব্যবহারে ত্বক সুন্দর দেখালেও এর মধ্যে ঠিক প্রাকৃতিক বা ন্যাচারাল সৌন্দর্য থাকে না। আবার এসব উপাদানে রঙ, প্রিজারভেটিভ, সুগন্ধীসহ এমন অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়, যা অনেক সময় স্পর্শকাতর ত্বকে র‍্যাশ, চুলকানি, ব্রণ বা অন্যান্য সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে। আপনার বান্ধবী কোনও পণ্য ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়ার মানে এই নয় যে, আপনিও একই ধরনের উপকার পাবেন। হতে পারে, তাঁর ত্বকে যেটা মানিয়ে গেছে, আপনার ত্বকে তা নাও মানাতে পারে। কারণ প্রত্যেকের ত্বকের ধরন আলাদা। কেউ জানে না কোন পণ্যে অ্যালার্জি তৈরি হতে পারে। তাই বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে, নতুন কোনও পণ্য ব্যবহারের আগে তা ত্বকের অল্প কিছু জায়গায় প্রয়োগ করে দেখা।

রূপচর্চা ও প্রসাধনীর ক্ষেত্রে আপনার চাহিদা ভিন্নরকম হতে পারে। তবে নিজের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে সবার প্রক্রিয়া কিন্তু একই রকম। যেকোনো স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মতোই স্বাস্থ্যকর রুটিন অনুসরন করে চললে এর প্রভাব দেহ ও মনের উপর পড়ে। তাই আমরা এখানে এমনই কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করবো, যা আপনি মেনে চলতে পারেন।

১। প্রতিদিন সুষম খাবার খানঃ

যেকোনো খাবারই ক্ষুধা দূর করতে পারে। তবে সুন্দর স্বাস্থ্য ও ত্বক পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খেতে হবে। সুষম খাবার ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করতে আপনার খাবারের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি রাখতে পারেন। এর ফলে আপনার দেহ প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলস পাবে, যা আপনার ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

২। বেশি করে পানি পান করুনঃ

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ার মাধ্যমে আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখুন। এর ফলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হওয়ার পাশাপাশি দেহের ভিতরের পরিপাকতন্ত্র ও অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কার্যক্ষম ও সচল থাকবে। এছাড়াও বিশুদ্ধ ও পরিস্কার পানি খেতে চেস্টা করুন। কারণ, অপরিচ্ছন্ন পানি আপনার সংবহন তন্ত্রের উপকার না করে বরং নানা রোগের কারণ হতে পারে। আজকাল বাজারে অনেক ধরনের ফিল্টার পাওয়া যায়। খাবার পানি প্রথমে ফুটিয়ে তারপর ফিল্টার করে খেতে পারেন।

৩। নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ

প্রতিদিনের রুটিনে কিছু সময় ব্যায়ামের জন্য রাখুন। ব্যায়াম হতে পারে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা অন্যান্য শারীরিক কসরত। এর ফলে আপনার দেহের বাড়তি মেদ ঝরে যাবে এবং আপনাকে আরো ফিট, সুন্দর, সুঠাম দেহী করে তুলবে। এছাড়াও কোনও শারীরিক জটিলতা বা অসুখ থাকলে তা থেকে নিরাময়ের জন্য ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি বাড়তি অনুপ্রেরণা পাবেন। কোনো ধরনের প্রেশার, ডায়বেটিস বা এই জাতীয় রোগ থাকলে ব্যায়ামের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর ব্যায়াম করবেন।

৪। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করুনঃ

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে আপনাকে প্রকৃত বয়সের চেয়েও বেশী বয়স্ক মনে হতে পারে। এর ফলে আপনি বাড়তি মানসিক চাপে ভুগতে পারেন ও এর প্রত্যক্ষ প্রভাব আপনার শরীরে ও মনেও পড়তে পারে। তাই দিনে অন্ততঃ ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে চেষ্টা করুন। এজন্য সকাল সকাল ঘুমাতে যাওয়ার ও ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা করুন।

৫। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন:

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। সঠিক ভাবে ত্বক পরিষ্কার ও তাতে তেল বা লোশন ব্যবহার করলে আপনার ত্বক এমনিতেই উজ্জ্বল, নরম ও কোমল থাকবে। দিনে দুইবার ভালোভাবে মুখ ধোয়ার অভ্যাস করলে ত্বকের মরা কোষ ও জীবাণু এমনিতেই দূর হয়ে যাবে। এর ফলে ত্বকে ব্রণ বা ফুস্কুড়ির মতো সমস্যা দেখা দিবে না। একই সাথে হাত, পা ও মাথার চুলও নিয়মিত পরিস্কার করা উচিত। প্রতিদিন নিয়মিত কমপক্ষে একবার গোসল করুন।

৬। মুখের ভাব ও ভঙ্গিমা ঠিক রাখুন:

যখন আমরা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ বা চিন্তিত হয়ে যাই, তখন আমাদের মুখের ভাবভঙ্গি স্বাভাবিক ভাবেই পাল্টে যায়। কিন্তু এটা যদি সব সময়ই থাকে, তাহলে ত্বকের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি মুখের ভাব ভঙ্গিমার কারণে অনেক সময় ত্বকও কুঁচকে যায়। তাই, আপনি যদি মানসিক চাপে বা খুশিতে থাকেন, তখন খুব স্বাভাবিক ভাবেই ত্বকের উপর এর প্রভাব লক্ষ্য করে থাকবেন। হাসলে নিশ্চয়ই আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর হয়। অন্যদিকে বিষন্ন, মনমরা ও মানসিক চাপে থাকলে তাও ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে।

৭। হালকা পাতলা ও আরামদায়ক পোশাক পরুন:

দামী এবং গর্জিয়াস পোশাক পরার ফলে আপনাকে হয়তো সুন্দর দেখাবে, কিন্তু এই ধরনের পোশাক পরে আপনি খুব বেশী লম্বা সময় থাকতে পারবেন না। লম্বা সময় দামী গর্জিয়াস পোশাক পড়ে থাকা যেমন আরামদায়ক না, তেমনি এই ধরনের পোশাক লম্বা সময় পরে থাকলে পোশাকের সৌন্দর্যও নষ্ট হয়ে যায়। তাই রুচিশীল রঙের হালকাপাতলা, আরামদায়ক পোশাক পড়তে চেষ্টা করুন। যাতে এই ধরনের পোশাক পরে চলাফেরা করতে কষ্ট না হয়। আপনার পোশাকটি তুলনামূলক সস্তা হলেও তা যদি দেখতে সুন্দর দেখায় ও পরতে আরামদায়ক হয়, তাহলে নিশ্চয় আপনি এই ধরনের পোশাক পরেই বেশিক্ষন কাটাতে চাইবেন। সর্বোপরি পোশাক কেনার আগে একটা বিষয় মাথায় রাখুন, পোশাকটি দেখতে সুন্দর এবং পড়তে আরামদায়ক কিনা। এক্ষেত্রে দাম খুব বড় কিছু নয়।

৮। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব:

আপনার কথা বলার এবং হাঁটার পদ্ধতি এমন হওয়া উচিত যা আপনার ব্যক্তিত্বকে আরও সুন্দর এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। তাই এমনভাবে কথা বলুন যাতে সবাই আপনার কথা বুঝতে পারে এবং এমনভাবে চলুন যাতে সবাই আপনাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করে। সম্মান দেওয়া হলো সম্মান পাওয়ার একটি পূর্বসূত্র। আপনার কথাবার্তা এবং রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন। এর ফলে, আপনি অন্যদের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় ও পছন্দনীয় হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন। এবং আপনার চলাফেরা আরো সুন্দর ও মার্জিত হয়ে উঠবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: